সমকাল
ইটভাটার প্রসার কৃষিজমি হ্রাসের নতুন উপদ্রব- মন্তব্য করে বিদ্যমান ইটভাটা আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। তারা বলেছেন, ইটভাটার কারণে যাতে কৃষিজমি নষ্ট না হয় এ আইনে তার সুস্পষ্ট বিধান থাকতে হবে।

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে পরিবেশবাদী ও দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ‘ইটের ভাটার প্রসার :বিপন্ন কৃষিজমি, বন, পাহাড় এবং মানুষের অধিকার’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজক ‘নিজেরা করি’ এবং এএলআরডি। নিজেরা করির প্রধান নির্বাহী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলার

প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার ৯৬ বিঘা কৃষিজমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। আর ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ জমি নষ্ট হচ্ছে ইটভাটা, শিল্প কারখানা নির্মাণ, তামাক ও চিংড়ি চাষে। তিনি বলেন, ‘৬ ইঞ্চি গভীরতায় কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি যদি উত্তোলন করা হয়, তবে ৭০ হাজার ইট প্রস্তুত করতে এক হেক্টর কৃষিজমি প্রয়োজন। এতে মাটির পুষ্টি উপাদান যে পরিমাণ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তার আর্থিক মূল্য ২.৫ মিলিয়ন টাকা এবং ফসলের ক্ষতির আর্থিক মূল্য ০.৬ মিলিয়ন টাকা।

এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামছুল হুদা বলেন, কৃষিজমি যাতে নষ্ট করা না হয়, তার সুষ্ঠু বিধান করে দিতে হবে ইটভাটা আইনে। এ জন্য সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া দরকার বলে মত দেন তিনি।

সেমিনারে নাটোরের আমচাষি মিন্টু মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় আমচাষিরা খরচ করছে, কিন্তু ফলন পাচ্ছে না। ইটভাটার প্রভাবে সব ধরনের ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। নাটোরের আরেক আমচাষি ফরহাদ শেখ বলেন, ‘ইটভাটার প্রভাবে আমার ৩৫০টি আমগাছের আম, তিন বিঘার মতো জমির ধান একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।’

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সাদেক পিইঞ্জ, অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. স্বপন আদনান, পার্বত্য চট্টগ্রামের বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা, এলআরডির উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি প্রমুখ।